মসজিদে ঢোকার দোয়া - মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া
আসসালামু আলাইকুম আপনি কি মসজিদে ঢোকার দোয়া ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমরা যখন মসজিদে ঢুকে থাকি তখন মসজিদে ঢোকার দোয়া পড়তে হয় এবং এটা পড়া উচিত। কিন্তু দোয়াটি কি না জানার কারণে অনেকেই পড়তে পারি না তাই জেনে নিন মসজিদে ঢোকার দোয়া এবং মসজিদে প্রবেশের আরো নিয়ম।
মসজিদে ঢোকার দোয়া মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া মসজিদে প্রবেশের ৫ টি সুন্নত মসজিদে প্রবেশের নিয়ম মসজিদে গুরুত্ব এ সকল বিষয়ে আজকের আর্টিকেল আলোচনা করা হবে তাই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পেজ সূচিপত্রঃ মসজিদে ঢোকার দোয়া - মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া
- মসজিদে ঢোকার দোয়া
- মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া
- মসজিদে প্রবেশের ৫ টি সুন্নত
- মসজিদে প্রবেশের নিয়ম
- মসজিদের গুরুত্ব
- প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর । FAQs
- মসজিদে ঢোকার দোয়া - মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া: শেষ কথা
মসজিদে ঢোকার দোয়া
বিভিন্ন জায়গায় আমাদের বিভিন্ন রকম দোয়া পাঠ করতে হয় আর এতে করে আল্লাহ আমাদের যেকোন বালা মুসিবত থেকে মুক্তি দেন এবং আমাদের উপর খুশি হন। সেজন্য আপনি যদি মসজিদে প্রবেশ করতে চান তাহলে মসজিদে ঢোকার দোয়া পড়তে হবে। আর আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশের জন্য এই দোয়াটি শিখিয়ে দিয়ে গেছেন তাই আমরা মসজিদে প্রবেশের সময় উক্ত দোয়াটি পাঠ করব।
মসজিদে ঢোকার দোয়াটি হলো
আরবি: الله همف تحلي ابوا با رحمة
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাফ তাহলি আবওয়া-বা রাহমাতিকা
অর্থ: হে আল্লাহ আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দরজা সমূহ খুলে দিন। ( ইবনে মাজাহ: ৬৩৩)
আরো পড়ুনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ কয়টি - নামাজের ১৩ ফরজ কি কি
মসজিদে ঢোকার জন্য এই দোয়াটি পড়তে হবে আর মসজিদে ঢোকার সময় প্রথমে ডান পা
দিয়ে ঢুকতে হবে এবং মসজিদ থেকে যখন বেরিয়ে যাবেন তখন বাম পা দিয়ে বেরিয়ে যেতে
হবে। এটা যদি পালন করেন তাহলে এটার জন্য নেকি পাবেন। তাই যখন মসজিদে প্রবেশ
করবেন তখন এইগুলো খেয়াল করে ঢুকবেন এবং বের হবেন। তবে কেউ যদি এগুলো ভুলবশত না
করে তাহলে কোন পাপ হবে না। আর খেয়াল করে যদি করে তাহলে সেটা সুন্নাহ পালন
করা হবে।
মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া
উপরের অংশ পড়ে মসজিদে ঢোকার দোয়া জানতে পেরেছেন কিন্তু শুধুমাত্র মসজিদে ঢোকার দোয়া পড়লেই হবে না মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া রয়েছে সেটাও পড়তে হবে। যখন মসজিদ থেকে সালাত আদায় করে বাইরে চলে আসবেন তখন মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়াটি পড়বেন পড়ার পরে বাইরে চলে আসবেন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার জন্য যে দোয়াটি পড়বেন সেই দোয়াটি হলো।
আরবি: بسم الله-مرحبا كان صلاتو كان سلامو علاء رسول الله الله هوما ايني اسالوكا من فدوليكا اللهوما اسيماني ميناش شيتانيير رازيم
উচ্চারণ : বিসমিল্লা-হি ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিল্লাহ আল্লা হুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদ্বলিকা আল্লাহুম্মা আসিমনি মিনাশ শায়ত্বানির রাজীম।
আরো পড়ুনঃ হজের ফরজ কয়টি - হজ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি
অর্থ: বের হচ্ছি আল্লাহর নামে। আল্লাহর রাসুলের উপর শান্তি ও দরুদ বর্ষিত হোক। হে মহান আল্লাহ আপনি আমার জন্য আপনার রহমত ও দয়ার দরজাগুলো খুলে দিন। হে মহান আল্লাহ আপনি আমাকে বিতাড়িত শয়তান এর থেকে হেফাজত করুন।(সহিহুল জামি: ০১/৫২৮, আবু দাউদ: ০১/১২৬, ইবনে মাজাহ:০১/১২৯, ইবনুস সিন্নি:৮৮)
মসজিদে প্রবেশের ৫ টি সুন্নত
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ স্থান হলো মসজিদ সেজন্য মসজিদকে আল্লাহর ঘর বলা
হয়। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং পছন্দের জায়গা হল মসজিদ এবং সবচেয়ে
নিকৃষ্ট জায়গা হল বাজার। তাই আমাদের বেশি বেশি মসজিদে থাকা প্রয়োজন এবং ইবাদত
আমল করা প্রয়োজন। তবে এই মসজিদে প্রবেশের ৫ টি সুন্নত রয়েছে এগুলো অবশ্যই
আমাদের মানতে হবে। কারণ মসজিদ একটা পবিত্র জায়গা সেখানে আমাদের আদবের
সঙ্গে প্রবেশ করতে হবে।
মসজিদে প্রবেশের ৫ টি সুন্নতগুলো হলো:
- মসজিদে প্রবেশের প্রথম সুন্নত হল বিসমিল্লাহ বলা বা পাঠ করা।
-
পাক পবিত্র হয়ে যাওয়া অজু করার এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করা
- দুরুদ শরীফ পাঠ করা সুন্নত
-
মসজিদের প্রবেশের সময় আগে ডান পা দেওয়া।
- মসজিদে প্রবেশ করে ইতিকাফের নিয়ত করা
মসজিদে প্রবেশের নিয়ম
মসজিদে প্রবেশের নিয়ম হলো মসজিদে প্রবেশ করার আগে গোসল এবং অজু করে নেওয়া অর্থাৎ মসজিদে প্রবেশ করার আগে পাক-পবিত্র হয়ে নেওয়া। এবং মসজিদে প্রবেশের সময় ডান পা আগে দেওয়া এবং মসজিদে ঢোকার দোয়া রয়েছে সেটা পাঠ করা। মসজিদ থেকে বের হয়ে আসার সময় বাম পা দিয়ে বের হয়ে আসা এবং মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া পাঠ করা।
এগুলোই হল মসজিদে প্রবেশের নিয়ম। সেজন্য আপনি যদি মসজিদে প্রবেশ করেন তাহলে
এ সকল নিয়ম মেনে মসজিদে প্রবেশ করবেন। আর আপনি যদি পাক পবিত্র না থাকেন
তাহলে কখনোই মসজিদে প্রবেশ করবেন না। কারণ আল্লাহর ঘর মসজিদ একটি পাক এবং পবিত্র
জায়গা তাই এখানে যেতে হলে পবিত্র হয়ে যেতে হবে এবং ইবাদত পালন করতে
হবে।
মসজিদের গুরুত্ব
মহান আল্লাহ তায়ালা বেশ কিছু নির্ধারিত এবাদত আমাদের মাঝে দিয়েছেন তার মধ্যে একটি হলো সালাত আদায় করা। আর এই সালাত আদায় করতে হয় মসজিদে গিয়ে। আর মসজিদ হলো আল্লাহর সবচেয়ে পছন্দের জায়গা এবং মসজিদকে বলা হয় আল্লাহর ঘর। মুসলিম সমাজের লোকজন প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত অর্থাৎ পাঁচ বার মসজিদে সালাত আদায় করার জন্য সমবেত হয়ে থাকে।
পবিত্র কোরআন শরীফে মসজিদ শব্দটি প্রায় ১৭ বার এসেছে। মসজিদ শুধুমাত্র ইবাদত বন্দেগী করার জায়গা নয় এটাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বলা যায়। কারণ আপনি যদি মসজিদে যান তাহলে আপনি আল্লাহ তায়ালার সকল নিয়ামত সম্পর্কে জানতে পারবেন আরও বিভিন্ন রকম শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন যা আমাদের মানব জীবনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
আরো পড়ুনঃ যাকাত কাকে বলে - বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়
ইসলামের যত শিক্ষা রয়েছে এবং আমাদের সামাজিক জীবনের যত শিক্ষা রয়েছে সবকিছু আপনি মসজিদ থেকে জানতে পারবেন এবং শিখতে পারবেন। আর মসজিদের আরেকটি গুরুত্ব হলো মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া ওয়াজিব যা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। মসজিদের গুরুত্ব অপরিসীম যা বলে শেষ করা যাবে না।
আপনি যদি নিয়মিত মসজিদে যান তাহলে দেখবেন আপনার মনে অনেক শান্তি চলে আসবে। এবং
আপনি যদি কোন সমস্যায় পড়ে থাকেন তাহলে মসজিদে যান ইনশাআল্লাহ সকল সমস্যার
সমাধান হয়ে যাবে। তাহলে আশা করছি এর থেকে বুঝতে পারলেন মসজিদের গুরুত্ব কত
বেশি।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর । FAQs
প্রশ্ন: মসজিদের হক কি কি?
উত্তর: মসজিদের বেশ কিছু হক রয়েছে যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং পবিত্র
পোশাক পড়ে যাওয়া মসজিদের হক, মসজিদে যাওয়ার আগে মেসওয়াক করে মসজিদে
যাওয়া মসজিদের হক, মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ পড়া মসজিদের
হক।
প্রশ্ন: মসজিদে গেলে কি নেকি পাওয়া যায়?
উত্তর: হ্যাঁ অবশ্যই মসজিদে গেলে নেকি পাওয়া যায় তবে আপনি যদি হেঁটে হেঁটে
মসজিদে যান তাহলে সেই কারণে বেশি নেকি লাভ করতে পারেন।
প্রশ্ন: মুসলমানরা কেন জামাতে নামাজ পড়ে?
উত্তর: মুসলমানরা জামাতে নামাজ পড়ে কারণ হলো একা একা নামাজ পড়ার থেকে
জামাতে নামাজ পড়া সবচেয়ে বেশি উত্তম। এবং জামাতে নামাজ পড়লে সেটা আল্লাহর
কাছে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।
প্রশ্ন: মহিলারা কি মসজিদে যেতে পারবে?
উত্তর: মহিলারা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারবে তবে মহিলারা যদি নামাজ পড়তে
মসজিদে যায় তখন পর্দার ব্যবস্থা থাকতে হবে যদি এমনটা না হয় তাহলে মসজিদে নামাজ
পড়তে যাওয়ার থেকে ঘরে নামাজ পড়াই উত্তম। তাই বলা যায় মহিলারা মসজিদে
যেতে পারবে তবে পুরুষদের সাথে দেখা হবে এরকমটা হলে যাওয়া যাবে না।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের সর্বপ্রথম মসজিদ কোনটি?
উত্তর: বাংলাদেশের সর্বপ্রথম মসজিদ হলো সাহাবায়ে কেরাম মসজিদ যেটা বর্তমানে লালমনিরহাট জেলায় অবস্থিত এবং এই মসজিদটি ৬৯ হিজরী সনে নির্মিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের মোট মসজিদের সংখ্যা কত?
উত্তর: বাংলাদেশের মোট মসজিদের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার ৪০০ টি। এখানে একটি ধারণা হিসেবে বলা হলো বর্তমানে এর থেকে আরো অনেক বাংলাদেশের মসজিদের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
মসজিদে ঢোকার দোয়া - মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া: শেষ কথা
মসজিদে ঢোকার দোয়া মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া মসজিদে প্রবেশের ৫ টি সুন্নত মসজিদে প্রবেশের নিয়ম মসজিদের গুরুত্ব এ সকল বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা এই সকল বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
তারপরেও যদি এই বিষয়ে আরো কোন কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিতে পারেন। এবং এরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে আমাদের JONOPRIYO BLOG ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।