প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত - কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা
কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত কিসমিস খাওয়ার নিয়ম রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় কিসমিসের অপকারিতা কি এই সকল বিষয় বিস্তারিত জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
কিসমিসের মধ্যে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন আয়রন, প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন বি ৬, পটাসিয়াম, কপার ইত্যাদি। তাই কিসমিস খাওয়া অনেক উপকারী তবে পরিমাণ মতো কিসমিত খেতে হবে। পুষ্টিবিদদের মতে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া উচিত।
আর ওজন করে যদি না খেতে পারেন তাহলে প্রতিদিন ৮ টা থেকে ১৫ টা কিসমিস খাওয়া উচিত। আর চিকিৎসক এর মতে সারা রাত কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে সেটা বেশি উপকারী হয়। আশা করছি প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত জানতে পারলেন।
কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা - কিসমিস এর উপকারিতা কি
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত এটা জানতে পারলেন কিন্তু কিসমিস খাওয়ার কতো উপকারিতা রয়েছে তা অনেকেরই অজানা। কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা এখন আপনাদের জানাবো। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা।
- কিসমিস যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে
- কিসমিস ঘুমের জন্য উপকারী
- কিসমিস ওজন বৃদ্ধি করে
- কিসমিস বাতের কমায়
- কিসমিস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- কিসমিস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- কিসমিস হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
- কিসমিস কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
- কিসমিস ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
- কিসমিস হাড় মজবুত করে
- কিসমিস ত্বক সুন্দর রাখে
- কিসমিস চুলের জন্য উপকারী
- কিসমিস শক্তি বৃদ্ধি করে
- কিসমিস হার্ট ভালো রাখে
- কিসমিস ডায়াবেটিসে উপকারী
- কিসমিস জ্বর নিরাময় করে
কিসমিস যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে
কিসমিসের মধ্যে বোরন নামক একটি খনিজ উপাদান রয়েছে যেটি নারী এবং পুরুষ
উভয়ের যৌন শক্তি এবং যৌন স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে। তাই যৌন শক্তি ও যৌন
স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে নিয়মিত পরিমাণ মতো কিসমিস খেতে পারেন।
আরো পড়ুন: মাশরুম এর ১৮ টি উপকারিতা - মাশরুম খাওয়ার নিয়ম
কিসমিস ঘুমের জন্য উপকারী
যাদের ঠিকমতো ঘুম হয় না তাদের জন্য কিসমিস খাওয়া অনেক উপকারী। নিয়মিত কিসমিস
খেলে এটা ঘুমের জন্য অনেক ভাল কাজ করে। তাই যাদের ঠিকমতো ঘুম হয় না তারা
নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
কিসমিস ওজন বৃদ্ধি করে
যাদের ওজন কম কিন্তু ওজন বৃদ্ধি করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য কিসমিস অনেক উপকারী। কিসমিস গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ। তাই নিয়মিত কিসমিস খেলে এটা শরীরের খারাপ কোলেস্টরেল জমতে দেয় না এতে করে ওজন বৃদ্ধি পাই।
কিসমিস বাতের ব্যথা কমায়
যাদের বাতের ব্যথা রয়েছে তাদের জন্য কিসমিস অনেক উপকারী। তাই নিয়মিত পরিমাণমতো কিসমিস খেতে পারলে এটা বাতের ব্যথা কমাবে।
কিসমিস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কিসমিসের মধ্যে বিভিন্ন রকম ভিটামিন খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এগুলো আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল গুলোর সাথে লড়াই করে এতে করে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
কিসমিস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
শরীরে যখন অতিরিক্ত সোডিয়াম বৃদ্ধি পায় তখন আমাদের উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পেয়ে যাই কিন্তু কিসমিস খাওয়ার ফলে কিসমিসের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
কিসমিস হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
কিসমিসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা বিষাক্ত এবং বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এতে করে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই যাদের হজম শক্তি কম তারা নিয়মিত কিসমিস খাবেন।
কিসমিস কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতার ভিতর আরেকটি সেরা উপকারিতা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা হজমের জন্য উপকারি। তাই কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
কিসমিস ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
কিসমিস ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বেশ উপকারী। কারণ কিসমিসের মধ্যে রয়েছে ক্যাটেচিং নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যাল কার্যকলাপ থেকে রক্ষা করে এতে করে নিয়মিত কিসমিস খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
কিসমিস হাড় মজবুত করে
কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং আরো বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান তাই নিয়মিত কিসমিস খেলে এটা আমাদের শরীরের হাড় মজবুত করে।
কিসমিস ত্বক সুন্দর রাখে
কিসমিসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান তাই নিয়মিত পরিমাণ মতো কিসমিস খেলে ত্বক অনেক উজ্জ্বল ও সুন্দর থাকে।
কিসমিস চুলের জন্য উপকারী
কিসমিস চুলের জন্য অনেক উপকারী। আমাদের শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যাল চুলের ক্ষতি করে থাকে কিন্তু নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিক্যাল ধ্বংস করে চুল সুন্দর ও মজবুত রাখে।
কিসমিস শক্তি বৃদ্ধি করে
অনেক সময় আমাদের শরীরের শক্তি কমে গিয়ে শরীর দূর্বল লাগে সেজন্য কিসমিস খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়। কারণ কিসমিসে কার্বোহাইডেট সহ আরো বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। সেজন্য নিয়মিত কিসমিস খাওয়া প্রয়োজন।
আরো পড়ুন: ছোলার ১২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম
কিসমিস হার্ট ভালো রাখে
কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতার ভেতর আরেকটি সেরা উপকারিতা হলো কিসমিস হার্ট ভালো রাখে। নিয়মিত কিসমস খেলে শরিরে জমা খারাপ কোলেস্টরেল দূর হয়ে যায় এবং ভালো কোলেস্টরেল বৃদ্ধি পাই এতে করে হার্ট ভালো থাকে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম থাকে।
কিসমিস ডায়াবেটিসে উপকারী
কিসমিস ডায়াবেটিস এর জন্য উপকারী অনেকে হয়তো মনে করতে পারেন কিসমিস তো মিষ্টি তাহলে কিসমিস ডায়াবেটিসের জন্য উপকারি কিভাবে আসলে কিসমিস মিষ্টি হলেও পরিমাণ মতো কিসমিস খেলে এটা শরীরের ইনসুলিন এর স্তর কমাতে সাহায্য করে এতে করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে বেশি পরিমাণ খাওয়া যাবে না।
কিসমিস জ্বর নিরাময় করে
কিসমিস জ্বর নিরাময় করে কারণ কিসমিসে এন্টিঅক্সিডেন্ট এন্টিবায়োটিক উপাদান রয়েছে যা আমাদের জ্বর অসুখ নিরাময় করতে বেশ কার্যকরি।
কিসমিস খাওয়ার নিয়ম - কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত এবং কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা গুলো শুধু জানলে হবেনা তার সাথে জানতে হবে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম কারণ নিয়ম মেনে কিসমিস খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে।
কিসমিস খাওয়ার নিয়ম হলো প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ গ্লাস পানির মধ্যে ১০ থেকে ১২ টি কিসমিস ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং সকালে কিসমিস গুলো পানি থেকে তুলে নিতে হবে। তারপর সেগুলো কিসমিস চিবিয়ে খেতে হবে। তারপর কিসমিস ভেজানো পানি গুলোও খেতে পারেন।
আরো পড়ুন: আমলকি খাওয়ার ২১ টি উপকারিতা - আমলকি খাওয়ার অপকারিতা
এই নিয়মে কিসমিস খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে অন্যান্য খাবার খাবেন। এই নিয়ম নিয়মিত কিসমিস খাবেন ইনশাআল্লাহ ভালো উপকারিতা পাবেন।
শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
শুকনো কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে হাড় ক্ষয় রোধ করে এবং বাতের ব্যথা দূর করে। এবং কিসমিসে আরো হয়েছে ভিটামিন সি যা ত্বকের জন্য বেশ উপকারী ত্বক উজ্জল ও সুন্দর রাখে। শুকনো কিসমিসে রয়েছে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে যেমন যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, ওজন বৃদ্ধি করে, বাতের ব্যথা কমায় , হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, হাড় মজবুত করে, চুল সুন্দর মজবুত করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, হাড় মজবুত করে এবং নিয়মিত কিসমিস ভিজিয়ে খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই কিসমিসের উপকারিতা পেতে নিয়মিত পরিমাণ মতো কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাবেন।
রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়
রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে শরীরের ওজন কমে কারণ কিসমিসে রয়েছে ফাইবার তাই রাতে কিসমিস খেয়ে ঘুমালে পেট ভরে থাকে এতে করে সকালে ঘুম থেকে উঠেই খিদে লাগে না আর কম খাওয়ার ফলে ওজন কমে।
রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেয়ে ঘুমালে এটা চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে। রাতে কিসমিস খেয়ে ঘুমালে হাড় মজবুত করে। রেগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাই। আবার রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে ঘুম ভালো হয়।
কিসমিসের অপকারিতা - কিসমিসের ক্ষতিকর দিক
কিসমিসের এত উপকারিতা থাকার পরেও নিয়ম না মেনে খাওয়ার কারণে বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে কিসমিসের অপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখলে নিয়ম মেনে খেতে সুবিধা হবে। কিসমিসের ক্ষতিকর দিক গুলো হলো।
- কিসমিস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে কিন্তু অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়।
- যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা কিসমিস খেলে এলার্জির সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- যাদের ওজন অনেক বেশি কিন্তু ওজন কমাতে চাচ্ছেন তাদের জন্য বেশি পরিমাণ কিসমিস খাওয়া উচিত নই কারণ বেশি পরিমাণ কিসমিস খেলে ওজন আরো বেড়ে যাবে।
- একসাথে অতিরিক্ত পরিমাণ বেশি কিসমিস খাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্ট সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত - কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা: শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানালাম প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত কিসমিস এর ১৬ টি উপকারিতা কিসমিস খাওয়ার নিয়ম শুকনো কিসমিস খেলে কি হয় কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় কিসমিসের অপকারিতা কিসমিসের ক্ষতিকর দিক গুলো কি কি এই সকল বিষয়ে।
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা এই সকল বিষয়ে জানতে পেরে কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন। তারপরও যদি এই বিষয়ে আরো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এবং এরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের JONOPRIYO BLOG ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।