নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায় - নাকের সর্দি দূর করার ঔষধের নাম জেনে নিন
সর্দি কেন হয়, ঘন ঘন সর্দি লাগা কিসের লক্ষণ, নাকের সর্দি কমানোর উপায়, নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ ড্রপ এর নাম সহ এই সম্পর্কিত আরো কিছু বিষয় বিস্তারিত জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলুন।
পোস্ট সূচিপত্র: নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায় - নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ
- সর্দি কেন হয়
- ঘন ঘন সর্দি লাগা কিসের লক্ষণ
- সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত?
- নাকের সর্দি কমানোর উপায়
- নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ - নাকের সর্দি দূর করার ট্যাবলেট - সর্দি কাশির সিরাপের নাম
- নাক বন্ধ হলে ড্রপ নাম
- সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত
- সর্দি কাশি হলে কি খাওয়া উচিত না
- নাক বন্ধ হলে ঘরোয়া উপায় - সর্দিতে নাক বন্ধ হলে করণীয়
- নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায় - নাকের সর্দি দূর করার ঔষধঃ শেষ কথা
সর্দি কেন হয়
সর্দি হওয়ার কারণ হলো ভাইরাস সংক্রমণ। বিশেষ করে শীতকালে এই ভাইরাস সংক্রমণের
সম্ভাবনা বেশি হয়ে থাকে। তাই শীতকালে একটু ঠান্ডা লাগলে এই ভাইরাসজনিত কারণে
সর্দি হয়ে থাকে। আর এই সংক্রমণ বিশেষ করে মানুষের নাকে আক্রমণ করে থাকে তাই
কারো একটু ঠান্ডা লাগলে সর্দি হয়ে থাকে। তবে সর্দি হলে চিন্তার কোন কারণ
নেই এটা দ্রুতই ভালো হয়ে যায়।
ঘন ঘন সর্দি লাগা কিসের লক্ষণ
যখন আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে তখন বিভিন্ন রকম সংক্রমণ আক্রমণ করে। তার মধ্যে একটি হলো সর্দি। ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে তখন সর্দি আক্রমণ করে এবং ঘন ঘন সর্দি লাগা কিছু সমস্যার লক্ষণ। ঘন ঘন সর্দি লাগা কিসের লক্ষণ তা জেনে নিন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াঃ যখন দেখবেন আপনার ঘনঘন সর্দি লাগছে
তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা কমে গেছে এবং সেই
কারণেই আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ইমিউন সিস্টেম অকার্যকরী হয়ে পড়েছে।
সেজন্যই মূলত ঘন ঘন সর্দি লাগছে।
নিউমোনিয়াঃ আপনার যদি ঘন ঘন সর্দি লাগে তাহলে সেটা নিউমোনিয়ার
লক্ষণ হতে পারে কারণ নিউমোনিয়া হলে ঘন ঘন সর্দি লাগবে এবং হাঁচি কাশি হবে
সেই সাথে গলায় ইনফেকশন দেখা দিতে পারে আর এই নিউমোনিয়া হলে মানুষের মৃত্যু
ঝুঁকি পর্যন্ত রয়েছে।
আরো পড়ুন: নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা - নাকের পলিপাস এর ড্রপ
ভিটামিন ডি এর অভাবঃ বিভিন্ন রকম রোগ বালাই থেকে মুক্ত থাকার জন্য
ভিটামিন ডি অনেক কার্যকরী। আর এই ভিটামিন ডি রোদ থেকে অনেকটা পাওয়া
যায়। তাই শীতকালে যেহেতু রোদ তুলনামূলক কম থাকে তাই ভিটামিন ডি এর অভাব
দেখা দেয় এতে করে সর্দিসহ বিভিন্ন রকম রোগ বালাই আক্রমণ করে।
সাইনোসাইটিসঃ সাইনোসাইটিস এর কারণে নাকের সাইনাসে ও আস্তরণে
প্রদাহ সৃষ্টি করে এতে করে ঘন ঘন সর্দি লেগে থাকে। এবং এটি ব্যাকটেরিয়া
দ্বারা সৃষ্টি হয়ে থাকে সেজন্য এটা অনেক বড় মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে
পারে। তাই এগুলো প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে হবে।
সর্দি কাশি হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত?
সর্দি কাশি হলেই আমরা বিভিন্ন রকম ঔষধ খেয়ে থাকি। কিন্তু অতিরিক্ত ওষুধ আমাদের জন্য অনেকটা ক্ষতিকর। তাই আপনার যদি শুধুমাত্র সর্দি হয়ে থাকে তাহলে ঔষধ খাওয়ার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ সর্দি এমনিতেই কয়েকদিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।
তবে আপনার যদি কাশি হয়ে থাকে তাহলে কাশির ওষুধ খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন। আর সর্দি হলে ওষুধ না খেয়ে নাকের সর্দি কমানোর উপায় রয়েছে সেগুলো উপায় অবলম্বন করে সর্দি ভালো করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায়।
নাকের সর্দি কমানোর উপায়
সর্দি সবারই হয়ে থাকে কিন্তু সর্দি হলেই যে ওষুধ খেতে হবে এমন কোন মানে নেই কারণ আপনি চাইলে কিছু ঘরোয়া উপায়ে সর্দি ভালো করতে পারেন। তাই এখন আপনাদের জানাবো নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায় যেগুলো উপায় ঘরোয়া ভাবেই করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায়।
১। শীতের সময় যেহেতু সর্দি বেশি লেগে থাকে সেজন্য প্রতিদিন সকালবেলা অথবা মাঝে মাঝে সকাল বা বিকাল বেলা করে একটু রোদে বসে থাকবেন এতে করে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি বৃদ্ধি পাবে এবং সর্দি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে আর যদি সর্দি থাকে তাহলে সেটা ভালো হয়ে যাবে।
২। হালকা পরিমাণ পানি নিয়ে তার মধ্যে কয়েক কুয়া রসুন দিন এবং সেগুলো একটু ফুটিয়ে নিন তারপরে তার মধ্যে আধা চামচ পরিমাণ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে সেগুলো পান করুন। ইনশাআল্লাহ সর্দি ভালো হয়ে যাবে।
৩। সর্দি কমানোর জন্য আদা চা খাওয়া অনেক উপকারী। তাই আপনি যদি আদা চা খেতে পারেন তাহলে এটা আপনার সর্দি ভালো করতে অনেক ভালো কাজ করবে। সে জন্য আপনার সর্দি হলে আদা চা খাবেন ইনশাআল্লাহ সর্দি কমে যাবে।
আরো পড়ুন: পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি - পাতলা পায়খানা হলে ঔষধ
৪। সর্দি হলে বিশ্রাম নিন এবং পারলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে পারেন। পানি ঘাটতে হয় এমন কোন কাজ কম করার চেষ্টা করুন।
৫। বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার চেষ্টা করুন। তরল জাতীয় খাবার হিসেবে বিভিন্ন রকম ফলের রস খেতে পারেন। তাহলে ইনশাআল্লাহ এটা আপনার সর্দি ভালো করতে অনেক বেশি কাজ করবে।
৬। ঠান্ডা লাগার জন্য যেহেতু সর্দি হয়ে থাকে সেজন্য শরীর উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন। সর্দি কাশি ভালো হয়ে যাবে।
৭। আপনার বাসায় যদি গোলমরিচের গুড়া থাকে তাহলে হালকা পরিমাণ গোলমরিচের গুঁড়ো হাতের তালুতে বা যেকোনো পাত্রে নিন এবং তার মধ্যে হালকা পরিমাণ সরিষার তেল মিশিয়ে নাকে ধরুন তাহলে দেখবেন হাঁচি হবে এবং নাক ফাঁকা হয়ে যাবে। এতে করে মাথা ঝরঝরে হবে ভালো লাগবে।
নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ - নাকের সর্দি দূর করার ট্যাবলেট - সর্দি কাশির সিরাপের নাম
সর্দি লাগলে প্রথমে আমরা ওষুধের কথা ভেবে থাকি কারণ যে কোন কিছু হলেই ঔষধই আমরা মনে করি সঠিক সমাধান কিন্তু না সব সময় ঔষধ সঠিক সমাধান নয় তারপরেও যারা নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ খুজে থাকেন বা ওষুধের নাম জানতে থাকেন তাদের বলবো। তবে যেকোন ঔষধ এর বিষয়ে জানতে বা কোন ওষুধ খেলে সর্দি ভালো হবে এটা একজন ভালো চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে জেনে নেওয়া ভালো।
আরো পড়ুন: দাউদ কিভাবে ভালো হয় - দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম
তারপরেও যারা এখান থেকে নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ এর নাম জানতে চান তাদের বলবো নাকের সর্দি ভালো করার জন্য নিম্নোক্ত ঔষধ গুলো সেবন করতে পারেন।
- Histachin
- Histalex
- Dslor
- Neocilor
- Keto A 100
- Klarix
- Ambrox 75 SR
সর্দি কাশির সিরাপের নাম:
- Adolef
- Nectar Syrup
- Remocof
- Ambrox
- Adovas
- Madhuvas
- O Cof
এইগুলো সিরাপ শিশুদের জন্য। শিশুর সর্দি কাশি হলে এই সিরাপ গুলো খাওয়াতে পারেন। তবে যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে চিকিৎসক এর পরামর্শ গ্রহণ করবেন। ইন্টারনেটে যেকোনো ঔষধের নাম দেখে তা নিজ থেকে কখনোই খাবেন না।
নাক বন্ধ হলে ড্রপ নাম
যখন সর্দি লাগে তখন সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে যায়। মাথা অনেকটা ভারী হয়ে থাকে। তাই আপনার যদি সর্দি লেগে নাক বন্ধ হয়ে যায় তাহলে Antazol 0.05% (এন্টাজল ০.০৫%) এই ড্রপ টি ব্যবহার করতে পারেন। এর ব্যবহার বিধি হলো ৬থেকে ১২ বছর হলে প্রতি নাসারন্ধে দুই থেকে তিন ফোঁটা করে দিনে দুই থেকে তিনবার। এবং ৬ বছরের নিচে হলে প্রতি নাসারন্ধ্রে এক ফোটা করে দিনে দুই থেকে তিনবার।অথবা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার্য।
সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত
নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায় এবং নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ এর নাম ইতোমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন। কিন্তু আপনার যদি সর্দি হয় তাহলে কিছু খাবার বা ফল খাওয়ার মাধ্যমে সর্দি ভালো করতে পারেন। সর্দি হলে যেগুলো খাওয়া উচিত সেগুলো হলো।
- ডিমের সাদা অংশ
- আদা চা
- রসুন
- চিকেন স্যুপ
- কলা
- আপেল
- জলপাই
- কুল
- আমলকি
- আনারস
- পেয়ারা
- তেঁতুল
- আঙ্গুর
- আমড়া
- বিলিম্বি
- মধু
- দই
- সবুজ শাক সবজি
সর্দি কাশি হলে কি খাওয়া উচিত না
যেগুলো খাবার আমাদের জন্য উপকারী সেগুলো খাবারই আবার অনেক সময় অপকারিতা হতে পারে তাই সর্দি কাশি হলে কিছু খাবার বা ফলমূল খাওয়া উচিত নয়। সর্দি কাশি হলে এই খাবার গুলো এড়িয়ে চলুন।
- স্ট্রবেরি
- পেঁপে
- আখরোট
- অতিরিক্ত চা কফি
- চর্বি জাতীয় খাবার
- ভাজাপোড়া খাবার
- অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়
- ঠান্ডা খাবার
নাক বন্ধ হলে ঘরোয়া উপায় - সর্দিতে নাক বন্ধ হলে করণীয়
রসুন - রসুনের কোয়া পানির মধ্যে দিয়ে সেই পানি হালকা কুসুম গরম করে পান করলে নাক বন্ধ খুলে যাবে।
আদার রস - আদা কেটে তার রস বের করে সেগুলো যদি খেতে পারেন তাহলে নাক বন্ধ খুলে যাবে।
পেয়াজ - একটা পেয়াজ কেটে নিয়ে নাকের কাছে ধরে রাখুন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হওয়া নাক খুলে যাবে।
তেজপাতা - নাক বন্ধ হলে কয়েকটি তেজপাতা নিয়ে হালকা পরিমাণ পানির মধ্যে দিয়ে দিয়ে জাল করে সেকে নিয়ে সেগুলো পান করুন তাহলে দেখবেন নাক অনেকটা ফাকা হয়ে গেছে।
এগুলো করার পরেও যদি নাক বন্ধ হয়েই থাকে তাহলে ওপরে বলে দেওয়া এবং ছবিতে দেখানো ড্রপটি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে নাক বন্ধ খুলে যাবে।
নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায় - নাকের সর্দি দূর করার ঔষধঃ শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা নাকের সর্দি কমানোর ৭ টি উপায় এবং নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ এর নাম সহ এ সম্পর্কিত আরো অনেক কিছু বিষয়ে জানতে পেরেছেন। এগুলো আপনাদের কিছুটা হলে উপকারে আসবে।
তারপরেও আপনাদের যদি এ বিষয়ে আর কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এবং এরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের Jonopriyo Blog ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।