না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো তা জেনে নিন
তো আপনিও যদি না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো এ বিষয়টি গুগলে লিখে সার্চ করে আমাদের এই পোস্টটি ওপেন করেন তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো
- না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো
- রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম
- রাতে ঘুম আসে না কেন - ঘুম না আসার কারণ
- ১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়
- প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার উপায় - রাতে ঘুম না হলে করনীয়
- না ঘুমালে কি ক্ষতি হয়
- কতদিন না ঘুমালে মানুষ মারা যায়
- না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবোঃ শেষ কথা
না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো
না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো এটি একটি অযৌক্তিক প্রশ্ন কারণ কখনোই না ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পড়া সম্ভব না।অনেক বেশি পরিশ্রম করার পরে আমাদের শরীর যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখন শরীরে আবার পুনরায় এনার্জি ফিরিয়ে আনার জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
কিন্তু আপনি কখনোই না ঘুমিয়ে ঘুমাতে পারবেন না।তবে আপনি যদি ঘুমাতে চান তাহলে কিছু কৌশল রয়েছে সেগুলো অবলম্বন করে খুব সহজেই কিছু সময়ের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন। নিচের অংশে আপনাদের জানাবো কিভাবে আপনারা খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন।
রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম
রাতে ঘুম না আসা অথবা ঘুম আসলেও কিছুক্ষণ পর ভেঙে গিয়ে আর ঘুম না আসা ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগ বলা হয়ে থাকে। আর এই রোগ বা সমস্যাটি যাদের হয়ে থাকে তাদের বিশেষ করে রাতের বেলা ঘুম আসতে চায় না সেজন্য দিনের বেলা ঝিমুনি ভাব হয়ে থাকে এবং কোন কাজে মন বসে না।আর এভাবে অনেকদিন ধরে অনিদ্রার সমস্যা থাকলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এতে করে মানুষের সাথে কথা বলতে লাগলে অল্পতেই রেগে যেতে হয়। ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগ হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে সেগুলো হলোঃ
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ
-
অতিরিক্ত ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় পান করা
-
অতিরিক্ত ধূমপান এবং মাদকদ্রব্য সেবনের কারণে
-
উচ্চ রক্তচাপের মতো আরও কিছু রোগের কারণে
- অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে
- অতিরিক্ত ডাক্তারি ঔষধ সেবনের কারণে
রাতে ঘুম আসে না কেন - ঘুম না আসার কারণ
রাতে ঘুম আসে না কেন বা ঘুম না আসার কারণ বেশ কয়েকটি রয়েছে যেমন - আপনি যদি সারাদিন কোন পরিশ্রমের কাজ না করেন এবং সারাদিন শুয়ে বসে থাকেন তাহলে রাতের বেলা আপনার ঘুম আসতে চাইবে না, রাতের বেলা ঘুম না আসার আরেকটি কারণ হলো ঘুমাতে গিয়ে মোবাইল ব্যবহার করা, ঘুমানোর আগে চা অথবা কফি পান করবে রাতের বেলা ঘুম আসতে চায়না।
এছাড়াও রাতে ঘুম না আসার আরেকটি কারণ হলো ঘুমানোর জায়গা ঠিক থাকে না যেমন অতিরিক্ত গরম জায়গায় ঘুম না আসবে না সেজন্য ঠান্ডা জায়গা নির্বাচন করুন, রাতে ঘুম না আসার আরেকটি কারণ হলো দুপুর বেলা বা বিকাল বেলা ঘুমানো, অ্যালকোহল বা নেশা জাতীয় কোন দ্রব্য অতিরিক্ত সেবন করার কারণে রাতের বেলা ঘুম আসে না, এছাড়া অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে রাতের বেলা ঘুম আসে না।
১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়
মানুষের জীবনে ঘুম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে বিভিন্ন রকম শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। অনেকের ঠিকমতো ঘুম আসতে চায় না সেজন্য জানতে চেয়ে থাকে ১ মিনিটে ঘুম আসার উপায় আসলে ১ মিনিটে ঘুম আসার কোন নির্দিষ্ট উপায় নেই।
তবে আপনি যদি চেষ্টা করেন তাহলে ৪/৫ মিনিটের মধ্যে ঘুম আসতে পারবেন। প্রথমে কিছুটা ঠান্ডা জায়গা দেখে পিছনে তৈরি করে নিবেন তারপরে রুমে যদি লাইট থাকে তাহলে সেটি অফ করে দিবেন এরপরে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়বেন এবং চোখ বন্ধ করে রাখবেন।
আরো পড়ুনঃ ঘুমের ঔষধের নাম ও দাম - ঘুমের ঔষধের নাম ছবি
হাতে কোন মোবাইল ফোন রাখা যাবেনা এভাবে যদি কয়েক মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখেন তাহলে ইনশাআল্লাহ ঘুম চলে আসবে। এছাড়াও নিচে আপনাদের আরো কিছু উপায় বলা হচ্ছে যেগুলো পড়ে নিন।
প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার উপায় - রাতে ঘুম না হলে করনীয়
প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুমাতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
কারণ আপনার শরীর যদি ক্লান্ত না থাকে তাহলে রাতের বেলা ঘুম আসতে চাইবে
না। দিনের বেলা যদি শারীরিক পরিশ্রম করার জন্য শরীর ক্লান্ত থাকে তাহলে
বিছানায় শোয়ার সাথে সাথে চোখে ঘুম চলে আসবে। প্রাকৃতিক ভাবে ঘুমানোর জন্য
আরো কয়েকটি উপায় রয়েছে সেগুলো হলোঃ
১। যদি ঘুম না আসে তাহলে হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করে নিতে পারেন তাহলে এটা আপনার শরীরকে শিথিল করবে এবং তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসবে।
২। যদি ঘুম না আসে তাহলে বিছানায় শুয়ে না থেকে উঠে যাবেন এবং কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করবেন এবং এমন কিছু কাজ করবেন যেগুলো আপনাকে কিছুটা ক্লান্ত করে তাহলে দেখবেন তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসবে।
৩। প্রাকৃতিকভাবে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর আরেকটি উপায় হল যখন দেখবেন আপনার ঘুম আসবে না তখন বই হাতে নিয়ে পড়তে থাকবেন তাহলে দেখবেন একটু সময়ের মধ্যেই আপনার ঘুম চলে এসেছে। এটা অনেকেই মজার ছলে বলে থাকে তাই চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
৪। প্রাকৃতিকভাবে ঘুমাতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে দিনের বেলা শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করতে হবে এতে করে আপনার শরীর ক্লান্ত থাকবে এবং রাতের বেলা বিছানায় গেলে তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসবে।
৫। অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে সেজন্য অতিরিক্ত মানুষের চাপ এবং দুশ্চিন্তা থেকে কিছুটা বিরত থাকবেন। তাহলেই রাতের বেলা ভালো ঘুম হবে। যদিও দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে বলা সহজ কিন্তু যার সমস্যা রয়েছে সে শুধুমাত্র বুঝবে এটা কতটা কঠিন।
৬। ভালো ঘুমের জন্য প্রতিদিন অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন এতে করে আপনার শরীর ফুরফুরা ও সক্রিয় থাকবে তখন রাতের বেলা তাড়াতাড়ি চোখে ঘুম চলে আসবে।
৭। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চাইলে অবশ্যই ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা অথবা কফি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এগুলোর মধ্যে থাকে ক্যাফেইন যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে থাকে তাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে এগুলো পান করবেন না।
৮। প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট বাহিরে সূর্যের আলোতে ঘোরাফেরা করে নিতে করে আপনার মস্তিষ্ক দিন এবং রাতের পার্থক্য বুঝতে পারবে এতে করে রাতের বেলা তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে।
৯। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চাইলে ঘুমানোর ২ ঘন্টা আগে খাবার খেয়ে নিবেন। এবং ১ ঘন্টা আগে থেকে মোবাইল ফোন টিভি বা কম্পিউটার দূরে রাখবেন। এগুলো দূরে রেখে বিছানায় শুয়ে পড়বেন তাহলে তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসবে।
১০। অনেক সময় শরীর মাসাজ করলে অনেক বেশি আরাম পাওয়া যায় তখন ঘুম চলে আসে। তাই রাতের বেলা যদি ঘুম না আসতে চায় তাহলে কাউকে দিয়ে শরীর মাসাজ করে নেবেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই ঘুম চলে আসবে।
না ঘুমালে কি ক্ষতি হয়
যদি আপনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন তাহলে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে
হবে। সর্বনিম্ন ৬ ঘন্টা ঘুমাতে হবে যদি নিয়মিত এরকম ঘুম হয়ে থাকে বিভিন্ন
রকম সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেগুলো আপনাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে
এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি পর্যন্ত রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায় - দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া
যদি নিয়মিত ৬ ঘন্টার কম সময় ঘুমান তাহলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে যেমন
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে, ভ হজম শক্তি কমে
যাবে, শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে, কোলেস্টোরেল বেড়ে যাবে, প্রচন্ড
মাথা যন্ত্রণা করবে, কাজে মনোযোগ বসবে না এতে করে কাজের ক্ষতি হবে। এছাড়াও
নিয়মিত না ঘুমালে আরো বিভিন্ন রকম শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি
হবে। যা আপনার আয়ু কমিয়ে দিবে এতে করে আপনি হঠাৎ করেই মৃত্যুবরণ করতে
পারেন।
কতদিন না ঘুমালে মানুষ মারা যায়
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে একজন মানুষ যদি ৮ দিন না ঘুমায় তাহলে তার অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হয়ে পড়বে এবং যদি টানা ১১ দিন এর বেশি সময় না ঘুমায় তাহলে সেই ব্যক্তির মৃত্যু অনিবার্য। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি এক নাগারে ১১ দিনের বেশি না ঘুমালে মারা যাবে।
তবে পৃথিবীতে কিছু অসাধারণ মানুষ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কিছু সময় বেশি হতে পারে আর সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে ১১ দিনের বেশি সময় না ঘুমিয়ে থাকা অসম্ভব। তাহলে আশা করছি জানতে পারলেন কতদিন না ঘুমালে মানুষ মারা যায়।
না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবোঃ শেষ কথা
না ঘুমিয়ে কিভাবে ঘুমাবো এই বিষয় সহ এই সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু বিষয়ে আজকের পোস্টে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনারা এই সকল বিষয়ে ক্লিয়ার ভাবে জানতে পেরেছেন।
তারপরও যদি আপনাদের এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।এবং এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের JONOPRIYO BLOG ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।